আগামী ১৭ অক্টোবরের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণার দাবি জানিয়েছে কিন্ডারগার্টেন ও সমমান স্কুল রক্ষা জাতীয় কমিটি। দাবি না মানলে আগামী মাসের প্রথম দিনেই আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।
এর আগে মানববন্ধন, যৌথ স্মারকলিপিও প্রদান করবেন তারা। এমন দাবিতে রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে কিন্ডারগার্টেন ও সমমান স্কুল রক্ষা জাতীয় কমিটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
রোববার (১১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ২১টি সংগঠনের যৌথ প্রয়াসে গঠিত এই জাতীয় কমিটির অংশগ্রহণে এ কর্মসূচী পালিত হয়।
এতে জাতীয় কমিটির আহবায়ক মো. মিজানুর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আর্থিক অনটনে পড়ে ইতোমধ্যে ১৪ জন শিক্ষক হৃদরোগ, আত্মহত্যাসহ নানা কারণে মারা গেছেন।
অধিকাংশ স্কুল ভাড়া বাড়িতে অবস্থিত হওয়ায় ভাড়ার চাপে হাজারো স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষকরা মানবেতর জীবন থেকে উত্তরণে কেউ কেউ পেশা পরিবর্তন করছেন। এটা রাষ্ট্রের জন্য অশনি সংকেত।
এসময় কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক নেতারা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারের সাফল্যের ক্ষেত্রে কিন্ডারগার্টেনের অবদান প্রায় অর্ধেক।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা স্কুল বন্ধের মধ্যেও সরকারি বেতন পাচ্ছেন আর কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা একই বই পড়িয়ে এবং পিইসি পরীক্ষায় তুলনামূলক ভালো ফলাফল অর্জন করেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থেকে বঞ্চিত।
এই বৈষম্য একটি সফল রাষ্ট্রে চলতে পারে না।
মানববন্ধন থেকে নেতারা বলেন, ‘বর্তমানে দেশের অফিস আদালত, মার্কেট, গার্মেন্টস, বাস, ট্রেন, লঞ্চ, পার্ক সর্বত্র লোক সমাগম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে সংক্রমণের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হলো। তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিন্ডারগার্টেন স্কুল খুলতে সমস্যা কোথায়?
দেশে এখন করোনা সংক্রমণের মাত্রাও অন্য সময়ের তুলনায় অনেক সহনীয়। তাই ১৭ অক্টোবরের মধ্যে স্কুল খুলে দেয়ার দাবি জানান তারা। নতুবা এ দাবি বাস্তবায়নে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে মানববন্ধন, যৌথ স্মারকলিপি প্রদান ও আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্ডারগার্টেন স্কুল দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বর্তমানে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলে জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে কর্মরত ৮ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা বরাদ্দ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় খুলে দেয়া ও স্ব স্ব স্কুলে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবি জানানো হয়।